সংবিধান সংস্কার কমিশন ২৫ নভেম্বরের মধ্যে আগ্রহী নাগরিক ও সংগঠনকে সংবিধান সংস্কার বিষয়ক পরামর্শ, মতামত ও প্রস্তাব নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানানোর আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু তাতে গণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা যথাযথভাবে উঠে আসার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। বিশেষ করে ইন্টারনেট/ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে বিচ্ছিন্ন প্রান্তিক ও শ্রমজীবী মানুষের মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে এটি খুব একটি সহজ নয়। তাই শ্রমজীবী ও পেশাজীবী মানুষের পাশাপাশি ছাত্র, শিক্ষক, অ্যক্টিভিস্ট সহ-সাধারণ নাগরিকের সংবিধান বিষয়ক ভাবনার কথা জানতে ২৩ শে নভেম্বর (শনিবার) জনমুক্তি ‘সংবিধানে জনআকাঙ্ক্ষা: মুক্ত আলোচনা’ শীর্ষক একটি উন্মুক্ত আলোচনার আয়োজন করে। জনমুক্তির মুখপাত্র খাঁন আয়্যুবের সভাপতিত্বে, সদস্য খাঁন মোহাম্মদ মোস্তফার সঞ্চালনায় কর্মসূচিটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন জনমুক্তির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিঠির যুগ্ম আহ্বায়ক খোবাইব হামদান, সদস্য শিশির আজাদ চৌধুরী, রকিবুল হাসান, মুহাম্মদ জায়েদ ও জাস্টিস ফর জুলাই, স্টুডেন্টস অ্যলায়েন্স ফর ডেমোমেক্রির প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। বক্তব্যে খাঁন আয়্যুব বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানে জন মতামতকে উহ্য করে আওয়ামী লীগের দলীয় সংবিধান রচিত হয়েছে যার ঘানি টানছে হয়েছে চব্বিশের হাজার হাজার ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ ও পঙ্গুত্ব বরণের ভিতর দিয়ে। ফলে রাষ্ট্র গঠনের এই সুযোগ যাতে ব্যর্থ সংবিধানে জন-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলন নিশ্চিতের মাধ্যমে হয় সে দিকে জোর দেন। এসময় বিদ্যমান সংবিধানে একক বাঙালী জাতিরাষ্ট্র ধারণার মাধ্যমে যে জাতিতাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব তৈরি করা হয় তার অবসান চান খোবাইব হামদান। শিশির আজাদ চৌধুরী বলেন, এই ৭২ এর সংবিধান তৈরিতে জন-মানুষের কোন মেন্ডেন্ট ছিলো না। এই সংবিধান পাহাড়ের সংঘাত তৈরি করছে। এই সংবিধান বারবার সংশোধন হয়েছে, শাসনতান্ত্রিক ক্ষমতা ও রাজনৈতিক প্রয়োজনে, নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য যে যার ইচ্ছা মত ধারা বসাইছে, কিন্তু জন-মানুষের কোন আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হয় নাই।
আলোচনায় শাসকের ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠার পেছনে বাহাত্তরের বিতর্কিত সংবিধানের দায় ও সংকটের কথা উঠে আসে। জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠা নতুন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সম্ভবনা যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য সংবিধানে জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নিশ্চিতের কথা বলেন বক্তারা। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র নির্মাণের লক্ষ্যে সংবিধান যাতে গণ মানুষের হয়ে উঠে এবং রাষ্ট্র প্রতিশ্রুত মৌলিক অধিকার যাতে নিশ্চিত সে দিকেও জোর দেন সাধারণ অংশগ্রহণকারীরা। কর্মসূচিটি আজ বিকাল ৩ টায় কাজির দেউড়ি মুক্তমঞ্চে শুরু হয়ে ধারাবাহিক আলোচনা ও জন মতামত সংগ্রহের মাধ্যমে শেষ হয়।