সাফায়েত মেহেদী, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জামায়াতের কর্মী সমাবেশে বিএনপির হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলায় দৈনিক ভোরের দর্পন পত্রিকার মিরসরাই প্রতিনিধি সাংবাদিক আশরাফ উদ্দিনসহ জামায়াতের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মিরসরাই পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের এস রহমান স্কুলে এই ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহতরা হলেন, দৈনিক ভোরের দর্পন পত্রিকার মিরসরাই প্রতিনিধি আশরাফ উদ্দিন (৩৯), উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আনোয়ারুল্লাহ আলম মামুন (৫৫) মো. নুরুল আলম (৪০), শহিদুল ইসলাম (৩০), সাইফুল ইসলাম (২৫), কফিল উদ্দিন (২০), নুর উদ্দিন (৩৩), কাজী সামির (২০), তানজিম (১৮), সাব্বির শাহাদাৎ (২০) ও রাহাত হাসান হাসিব (১৮)। আহতরা সবাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মস্তাননগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে আহত নুরুল আলমকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মিরসরাই উপজেলা জামায়াতের অফিস সেক্রেটারি শফিকুল আলম শিকাদার বলেন, শুক্রবার বিকেলে সাংগঠনিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিরসরাই পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে স্থানীয় একটি স্কুল মাঠে কর্মী সমাবেশ চলছিলো। এসময় এলাকার স্থানীয় বিএনপি নেতা শাহ আলম অনুষ্ঠান স্থলে এসে জামায়াত নেতাদের হাত থেকে মাইক কেড়ে নিয়ে বলেন, আমাদের না জানিয়ে অনুষ্ঠান করা যাবেনা। তখন আমাদের সংগঠনের নেতাকর্মীরা বুঝিয়ে তাকে অনুষ্ঠানস্থল থেকে বের করে দেন। এর কিছুক্ষন পর মিরসরাই পৌরসভা যুবদলের আহবায়ক কামরুল হাসানের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জনের একটি দল লাঠিসোটা ও হকস্টিক নিয়ে এসে মাইক কেড়ে নিয়ে বলেন আপনারা যে দলের হোন না কেন এখানে অনুষ্ঠান করতে হলে আমাদের থেকে অনুমতি নিতে হবে এ বলে এলোপাতাড়ি হামলা করে। হামলায় সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা সাংবাদিক আশরাফ ও আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, হামলায় আমাদের দুটি মোটরসাইকেল ও চেয়ার- টেবিল ভাংচুর করা হয়েছে। মিরসরাই পৌরসভা যুবদলের সভাপতি কামরুল হাসান বলেন, আমার কাছে খবর আসে জামায়াত আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে প্রোগ্রাম করছে। খবর পেয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করতে গেলে আমার উপর চড়াও হয়। এসময় তাদের হামলায় আমার অনেক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে।
মিরসরাই থানা জামায়াতের আমির মো. নুরুল কবির বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটায় তারা আমাদের কর্মী সমাবেশে এমন ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। বিষয়টি সাংগঠনিকভাবে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে’।
মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘মিরসরাই পৌরসভা এলাকায় জামায়াতের সমাবেশে হামলার ঘটনাটি একেবারেই অনাকাঙ্খিত। সংগঠন এই হামলার দায় নিবেনা। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এই হামলা ঘটিয়েছে। আমার জেলা যুবদলকে এ বিষয়ে অবহিত করেছি। তারা ঘটনার তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক জোবায়ের হোসেন তারেক জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় মারামারির ঘটনায় বেশ কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। তবে মো. নুরুল আলম নামে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মিরসরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) দীপ্তেশ রায় বলেন, ‘পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে জামায়াতের কর্মী সমাবেশে মারামারির ঘটনায় সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এই ঘটনায় থানায় এখনো পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।