

বোয়ালখালীর প্রবেশমুখ পূর্ব কালুরঘাট এলাকায় কথিত শ্রমিক নেতা নামধারী একদল দুবৃত্তের চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের ফলে অস্থির হয়ে পড়েছে সিএনজি চালক-মালিক ও স্থানীয়রা। পূর্ব কালুরঘাট পরিবহন সেক্টরে অন্যতম চাঁদাবাজ স্বৈরাচারী হাসিনার অন্যতম দোসর শ্রমিক লীগ নেতা কামাল হোসেন এবং নিজেকে বিএনপির শ্রমিক দলের নেতা দাবি করা অবৈধ শ্রমিকদল নেতা মোহাম্মদ জিয়াউল হোসেন প্রকাশ জেবল এর নেতৃত্বে এসব অপকর্ম চলছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে একাধিক সিএনজি চালক।
চালকেরা জানান, তাদের রয়েছে প্রায় ১৫-২০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। সিএনজি চালকরা নিয়মিত (মালটি না করলে) চাঁদা না দিলে গাড়ি আটক এবং মামলার ভয় দেখায়। এসব ব্যপারে সংশ্লিষ্ট বোয়ালখালী থানা রহস্যজনক কারনে নিরবতা পালন করছে স্থানীয় বিট, থানা ও ট্রাফিক পুলিশ প্রশাসন। বিশাল এই বাহিনীর খরচ মেটাতে পরিবহনে চাঁদাবাজির পাশাপাশি করছেন চুরি ছিনতাই ও জুয়ার ব্যবসার অভিযোগও আছে তাদের বিরুদ্ধে। আর এসব অপকর্মের অর্জিত আয়ের একটা অংশ সরকার বিরোধী কাজেও ব্যয় করছেন বলে জানা গেছে।
যে কারনে মামলা ও গাড়ি আটক:
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চালকেরা জানায়, কালুরঘাট, ফুলতল, সিও অফিস (বোয়ালখালী উপজেলা), কানুনগো পাড়া, বেঙ্গুরা, শাকপুরা, মিলিটারি পুল এবং পটিয়া মনসা বাদামতল রুটে প্রায় ১৫০০ (দেড় হাজার) সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করে। আর এসব গাড়িগুলো পূর্ব কালুরঘাট হইতে যাত্রী ওাঠা-নামা করায় এখানে চাঁদাবাজির মেইন পয়েন্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিটি গ্রামের নাম্বার সংবলিত সিএনজিকে মাসিক ৫৫০ টাকা এবং নাম্বার বিহীন সিএনজিকে ৮০০ টাকা দিয়ে মালটি টোকেন নিতে বাধ্য করে কামাল-জেবলের কালুরঘাটের সিন্ডিকেটটি। এছাড়াও যদি কোন চালক চাঁদা দিতে কিংবা মালটি না করতে অস্বীকার বা গড়িমসি করে তাহলে ট্রাফিক পুলিশের মাধ্যমে গাড়ি আটক এবং ডজন খানেক মামলা দিয়ে হয়রানি করে।
কারা আছেন সিন্ডিকেটে ?
বর্তমানে কথিত শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা, স্বৈরাচারী হাসিনার দোসর সাবেক শ্রমিক লীগ নেতা কামাল হোসেন, কথিত শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা মোস্তফা, অবৈধ কমিটির কথিত শ্রমিকদল নেতা জিয়াউল হোসেন প্রকাশ জেবল।
যেভাবে উত্থান কামাল, মোস্তফা – জেবলের:
বোয়ালখালী পৌরসভার উত্তর গোমদণ্ডী ২ নং ওয়ার্ডের মরিয়ম খাতুনের বাপের বাড়ির দরিদ্র ঘরে জন্ম কথিত এই দুই শ্রমিক নেতা কামাল জেবলের। কামাল-জেবল সম্পর্কে আপন দুই ভাই। মোস্তফার বাড়ি একই গ্রামে হাবিলদার বাড়িতে। স্বৈরাচারী হাসিনার আমলে ২০১১ সালে সাবেক এমপি, সাবেক দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মোসলেম উদ্দীন আহমদ এর বিশেষ সহকারী, পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র তারেকের আস্থাভাজন সাবেক শ্রমিক লীগ নেতা কামাল হোসেনের হাত ধরে গড়ে উঠে এই সিন্ডিকেটটি। পরবর্তীতে ফ্যাসিবাদী সরকার হাসিনার পতনের পর কিছুদিন চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও কথিত অবৈধ কমিটির শ্রমিক দল নেতা জিয়াউল হোসেন প্রকাশ জেবল এবং মোস্তফার হাত ধরে আবারো মাথা নাড়া দিয়ে উঠে সিন্ডিকেট টি।
কোথায় যায় চাঁদাবজির টাকা:
চাঁদাবাজির একটা বিশাল অংশ সিন্ডিকেটের সদস্যদের মধ্যে ভাগ পাওয়ার পর, ভাগের একটা অংশ পেয়ে থাকেন বোয়ালখালী থানা, ফুলতল পুলিশ বিট এবং ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। তাছাড়া রাষ্ট্র বিরোধী কাজেও খরচ চাঁদাবাজির টাকা একটি অংশ।