চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের কনফারেন্স কক্ষে আজ (৮ মে) অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন আহমদ ও মানবমুক্তির ভাবনা’ শীর্ষক এক স্মরণ সেমিনার।
বাঁশখালী স্টুডেন্টস’ এসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এই আয়োজনে অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন আহমদের চিন্তাধারা ও মানবমুক্তির দর্শন তুলে ধরা হয়।
বাঁশখালীর শিক্ষার্থীদের মেধা ও মনন বিকাশে নিয়োজিত সংগঠনটি নিয়মিত শিক্ষামূলক নানা আয়োজনে সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় কলেজের উপাধ্যক্ষ বশির উদ্দিন কনক এবং সঞ্চালনায় ছিলেন মোহাম্মদ এনামুল হক। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আলম চৌধুরী ও বিশিষ্ট শিক্ষক, অনুবাদক ও লেখক আলমগীর মোহাম্মদ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক জসিম উদ্দিন চৌধুরী।
সেমিনারে অধ্যাপক আসহাব উদ্দিনের লেখা বই “ঘুষ” নিয়ে একটি রিভিউ উপস্থাপন করেন এইচ এম রাশেদুল ইসলাম। ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের মেধাবী শিক্ষার্থী পলাশ অধ্যাপকের আদর্শ বাস্তবায়ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন।
অধ্যাপক আলম চৌধুরী তাঁর লেখা বই “অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন আহমদ ও মানবসমাজের মুক্তির ভাবনা” থেকে স্মৃতিচারণ করেন এবং তাঁর প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন—
“নেতা আর আদর্শ বিকিকিনির হাটে আসহাবউদ্দীন আহমদ নিজেকে কলুষিত করেননি। রাজনীতির সঞ্জীবনী শক্তি ‘আদর্শ’, কখনও তিনি তা বিকিয়ে দেননি। তাই রাজনীতি যখন আদর্শচ্যুত, নৈতিকতা যখন কথার কথা, বিবেক যেখানে হীনবুদ্ধির আঁতুড়ঘরে আবদ্ধ— এমন প্রগাঢ় অমানিশাকালে আমাদের বারংবার যেতে হবে বিবেকের প্রজ্বলিত শিখা আসহাবউদ্দীন আহমদ-এর কাছে।”
আলমগীর মোহাম্মদ আলোচনায় অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন আহমদের ব্যক্তি-জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “সমাজের চোখে হয়তো তিনি ছিলেন বোকা মিয়া, কিন্তু প্রকৃত অর্থে তিনি ছিলেন আদর্শবান, ন্যায়পরায়ণ, এবং আত্মত্যাগী একজন বিপ্লবী। নিজের সুবিধার কথা না ভেবে সমাজ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন।” তিনি তার আলোচনায় অধ্যাপকের লেখা ইন্দিরা গান্ধীর ফাঁসি চাই ও বাঁশ সমাচার এর উদাহরণ তুলে ধরেন এবং ইংরেজি সাহিত্যের বিভিন্ন দৃষ্টান্তের সাথে অধ্যাপকের সাহিত্যচর্চার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে বাঁশখালী স্টুডেন্টস’ এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ এনামুল হক ও সাধারণ সম্পাদক মরওয়ানুল ইসলাম উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তাঁরা ভবিষ্যতে আরও শিক্ষামূলক কার্যক্রম আয়োজনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এই স্মরণ সেমিনারটি অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন আহমদের জীবন ও দর্শনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিল।
