বৃহস্পতিবার , ১৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মহানগর

চট্টগ্রামে চিকুনগুনিয়া শনাক্তে  সরকারি হাসপাতালে ব্যবস্থা নেই

নগরীর ফিরিঙ্গিবাজারের বাসিন্দা ৩৮ বছরের হাসান মিয়ার তিন দিন ধরে জ্বর। শরীরের জয়েন্টে এমন ব্যথা, মনে হচ্ছে ভেঙে যাচ্ছে। মাথা ধরে আছে, মুখে র‌্যাশ উঠেছে। স্থানীয় ফার্মেসি থেকে প্যারাসিটামল সেবনেও স্বস্তি মিলেনি।

পরিবারের সদস্যরা একে মৌসুমী জ্বর হিসেবে ধরে নিয়ে গেল চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসক ‘চিকুনগুনিয়া’ সন্দেহ করে নিশ্চিত হতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্যোগ নিতেই ঘটল বিপত্তি। খবর নিয়ে জানা গেল- সরকারি হাসপাতালে এই রোগের পরীক্ষার ব্যবস্থাই নেই।

হাসান মিয়া বলেন, ডাক্তার বললেন টেস্ট করতে। বাইরে বেসরকারি ল্যাবে গেলে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা লাগে। দিনমজুর মানুষ এতো টাকা পাবো কোথায়?

শুধু হাসান মিয়া নন, নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে এমন শত শত রোগীর দেখা মিলছে। শরীরে জ্বর, জয়েন্টে তীব্র ব্যথা, শরীরে র‌্যাশ, প্রায় উপসর্গ এক। তবে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা না কোভিড, তা বোঝার উপায় নেই।

চলতি মৌসুমে কোভিড, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা- এ চার ধরনের রোগী বেড়েছে চট্টগ্রামে। এরমধ্যে প্রকোপ বেশি চিকুনগুনিয়ার। প্রতিদিনই নগরীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগীরা ভিড় করছেন জ্বর, জয়েন্টে ব্যথা ও লালচে র‌্যাশ নিয়ে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আবদুর রব বলেন, ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া দুটোই এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। উপসর্গ এক হলেও চিকুনগুনিয়ায় জয়েন্ট ফুলে যায়, ডেঙ্গুতে তেমন হয় না। কিন্তু পরীক্ষা না থাকলে রোগ বোঝা যায় না।

দুঃখজনক হলেও সত্য, কোভিড কিংবা ডেঙ্গু শনাক্তে ব্যবস্থা থাকলেও চট্টগ্রামে চিকুনগুনিয়া শনাক্তে সরকারি কোনো ল্যাবে পরীক্ষার ব্যবস্থাই নেই। যার কারণে অনেকটাই উপসর্গ দেখে ‘অনুমান’ নির্ভর চিকিৎসা চলছে।

শুধুমাত্র বেসরকারি কয়েকটি ল্যাবে এন্টিবডি পরীক্ষা হচ্ছে। আবার খরচও অনেক। বেসরকারি ল্যাবগুলোতে চিকুনগুনিয়া পরীক্ষায় গড়ে দেড় থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। দিনমজুর, নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য এই খরচ চালানো অসম্ভব।


সম্পর্কিত খবর