

মানিকগঞ্জ শহরের স্বর্ণকারপট্টিতে ঘটেছে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা, যা যেন সিনেমার কাহিনীকেও হার মানায়।
গতকাল (রবিবার) রাত ১২টার দিকে শহরের স্বর্ণকারপট্টির ‘অভি জুয়েলার্স’ নামের স্বর্ণের দোকানে সংঘটিত হয় এক নাটকীয় ডাকাতির ঘটনা। মোটরসাইকেলযোগে ছয়জন ডাকাত দোকানে ঢুকে লুটপাট চালায় এবং দোকানের মালিক শুভ দাসের পিঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একাধিক আঘাত করে।
স্থানীয়রা ডাকাত দল চলে যাওয়ার পর আহত শুভকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় এবং পুলিশকে খবর দেয়।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়, আসল ঘটনাটি শুরু হয় এরপরই।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দ্রুত অভিযান চালিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আসামি আমান, মিলন, শরিফ, নয়ন ও সোহাগসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।
তবে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশের সামনে বেরিয়ে আসে এক চমকপ্রদ তথ্য।
আসামিরা জানায়, তারা কোনো ডাকাত নয়। বরং দোকান মালিক শুভ দাসের পরিকল্পনা অনুযায়ী পুরো ডাকাতির নাটক সাজানো হয়েছিল। এই কাজের বিনিময়ে প্রত্যেককে দেওয়া হয় নগদ পাঁচ লাখ টাকা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ‘বাস্তব’ মনে করানোর জন্য শুভ দাসের পিঠেও ইচ্ছাকৃতভাবে ছুরি মারা হয়।
উদ্দেশ্য কী ছিল?
পুলিশ জানায়, ‘অভি জুয়েলার্স’-এ জমা ছিল প্রায় ৩৯ ভরি ৭ আনা স্বর্ণ। গ্রাহকদের জমাকৃত এসব স্বর্ণ আত্মসাতের উদ্দেশ্যেই শুভ দাস পুরো ডাকাতির নাটক সাজান।
তবে পুলিশের দ্রুত তৎপরতায় সব স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে, এবং আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
আজ দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ ঘটনাটির বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে।
মানিকগঞ্জের এই ঘটনায় শহরজুড়ে নেমে এসেছে বিস্ময় ও ক্ষোভ।
একজন প্রতিষ্ঠিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী এমন প্রতারণা করতে পারেন— তা কেউই সহজে বিশ্বাস করতে পারছেন না।