কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)-এর উদ্যোগে “ডেটা গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ইন্টারঅপারেবিলিটি” শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ভার্চুয়াল কক্ষে এই সেমিনারটি আয়োজিত হয়।
সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলী সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ও কী–নোট স্পীকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফাইজ আহমেদ তায়েব। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ সাইফুর রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোঃ তোফায়েল আহমেদ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসানসহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেরাব হোসেন সাকিব বলেন, 'আমাদের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আইটি কোম্পানিতে কাজ করে যাচ্ছে এবং গ্রাজুয়েশন শেষ করার আগে বড় বড় কোম্পানিগুলো থেকে জবের অফার লেটার পেয়ে যাচ্ছে, যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। এছাড়াও ২০২৪ সালের আইসিটি কন্টেস্টে বুয়েটকে পিছনে ফেলে চতুর্থ স্থান অর্জন করি, যা আমাদের জন্য অন্যতম মাইলস্টোন। কিন্তু সফলতার সাথে এভাবে এগিয়ে যাওয়ার পথ অনেক জটিল হয়ে উঠেছে আধুনিক এবং যথাযথ ল্যাব সুবিধার অভাবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা বিগত সময়ে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রোগামিং কনটেস্ট আয়োজন করেছি শিক্ষার্থীদের ল্যাপটপ দিয়ে। মাননীয় উপদেষ্টা যদি আমাদের হাই পারফরম্যান্স ল্যাব সুবিধা প্রধান করেন তাহলে তার যথাযথ আউটকাম সফলতার সাথে দিতে পারব।'
সেমিনারে প্রধান অতিথি ও কী–নোট স্পিকার ফাইজ আহমেদ তায়েব বলেন, ‘লালমাই সফটওয়্যার ইনোভেশন পার্কে ইতোমধ্যে নানা হার্ড ফ্যাসিলিটি তৈরি করা হয়েছে। তবে সফট স্কিল ডেভেলপমেন্টের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় যদি স্ক্রিপ্ট আকারে জানায় কোন কোন বিষয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে, আমরা সেটি উন্নয়ন করে আগামী তিন মাসের মধ্যেই হস্তান্তর করতে পারব। এই হাবের মাধ্যমে স্থানীয় প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন, নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং গবেষণার সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘নাগরিক সুরক্ষা ও মৌলিক অধিকার খর্ব হওয়ার সম্ভাবনা থেকে মুক্ত একটি পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার নতুন আইন প্রণয়ন করেছে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের এ আইন নাগরিক অধিকার সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলী বলেন, ‘আমরা একসাথে অনেক কাজ শুরু করি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনোটিই কার্যকর হয় না। প্রয়োজন হলো টেকসই পরিকল্পনা, যাতে একটি উদ্যোগ নিলে তা পরবর্তী বছর বাতিল না হয়ে যায়। ডেটা রিডান্ডেন্সির সমস্যায় আমরা বারবার পড়ছি—ভোটার তালিকার জন্য তথ্য নেওয়া হয়, আবার কিছুদিন পর আদমশুমারির জন্য একই তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এভাবে নীতিমালা তৈরি করতে হবে, যাতে একই কাজ বারবার না হয় এবং ভবিষ্যতে কেউ আগের উদ্যোগকে বাতিল করতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া বিকাশসহ অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থার কোনো বিশ্বাসযোগ্য তৃতীয়পক্ষ বা কার্যকর আইনি কাঠামো নেই। ফলে কেউ প্রতারিত হলে তার টাকা ফেরত পাওয়ার সহজ পথ নেই। পাঁচ হাজার টাকা প্রতারিত হলে মামলা করতে গিয়ে কয়েকগুণ বেশি খরচ হয়ে যায়, তাই মানুষ ক্ষতিটাই মেনে নেয়। ফলে দেশের গরীব ও অশিক্ষিত মানুষ প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে। ইভ্যালির মতো অনেক প্রতিষ্ঠান কোটি কোটি টাকা লুট করে পালিয়ে যাচ্ছে কেবল আইনি কাঠামোর অভাবেই। কী করলে কী শাস্তি হবে—এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় প্রতারণা রোধ করাও সম্ভব হচ্ছে না।’
মোবাইল : 017 99 59 59 ইমেইল : [email protected]
www.chattogrampost.com facebook.com/DainikChattogramPost
Copyright © 2025 দৈনিক চট্টগ্রাম পোস্ট. All rights reserved.