শুক্রবার , ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সারাদেশ

কুমিল্লায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৪ মাজারে হামলা-অগ্নিসংযোগ

কুমিল্লায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৪টি মাজার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া মহসিন নামের এ যুবককে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলার হোমনা উপজেলার আসাদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হোমনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) হোমনা উপজেলার আসাদপুর এলাকার মহসিন নামের এক যুবক তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে ইসলাম ধর্মের অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন একটি পোস্ট করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা ক্ষুদ্ধ হয়ে থানার সামনে জড়ো হয়ে মহসিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করেন। এরপর দুপুরে উপজেলার ফকিরবাড়ি এলাকা থেকে মহসিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে মহসিনের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

অপরদিকে ফেসবুকে আপত্তিকর ওই পোষ্টকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আসাদপুর এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকার কফিল উদ্দিন শাহ ও হাওয়ালি শাহ মাজারে আগুন এবং কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে হামলা-ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর কুমিল্লা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. নাজির আহমেদ খান ও হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষ্যেমালিকা চাকমা পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা বলেন, গত বুধবার নবীজী (সাঃ) কে নিয়ে কটুক্তির কারনে জনতার মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সেকারণে বিক্ষুব্ধ জনতা মাজারে হামলা, ভাংচুর ও আগুন দিয়েছেন।

হোমনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে জনতার দাবির প্রেক্ষিতে মহসিনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর মহসিনকে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু উত্তেজিত জনতা মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৪টি মসজিদে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় মামলা হবে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ঘটনার পর ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

 


সম্পর্কিত খবর