

খানাখন্দে ভরে গেছে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক। সড়কটি সরু হওয়ায় বেড়েই চলেছে দুর্ঘটনা। প্রাণহানিসহ চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে দূরদূরান্তের যাত্রীদের। এই কষ্ট কিছুটা লাঘব করতে ইতোমধ্যে সড়কটি প্রশস্তি করণে কাজ শুরু করেছে মাদারীপুর সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে মাদারীপুরের ভূরঘাটা পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে বাড়িয়ে চওড়া করা হচ্ছে। তবে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৬ লেনের এক্সপ্রেসওয়ে হওয়ার কথা থাকলেও দাতা ও তহবিলের অভাবে কাজ শুরু হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মাদারীপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান।
জানা যায়, পদ্মাসেতু হওয়ার পর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে আগের থেকে তিনগুন বেশি গাড়ির চাপ বেড়েছে। যে কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকাকালীন ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৬ লেনের এক্সপ্রেসওয়ের অনুমোদন করা হয়। এরপর ভূমি অধিগ্রহণের কাজ হলেও সরকারি তহবিলে অর্থ সংকট থাকায় স্থগিত থাকে এক্সপ্রেসওয়ের কাজ। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতা পরিবর্তনের পর অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে ভাঙ্গা-বরিশাল এক্সপ্রেসওয়ের কাজ স্থগিত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে আবার পুনরায় অনুমতি দিলেও সরকারি তহবিলের অভাবে থমকে আছে বরিশাল অঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশিত এক্সপ্রেসওয়ের কাজ।
সরজমিনে ঘুরে ও পথচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাদারীপুর সড়ক ও জনপদের অধিনে থাকা ভাঙ্গা থেকে ভূরঘাটা পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। খানাখন্দ ও গর্তে ভরে গেছে মহাসড়কটি। আর সেই গর্তগুলোতে ইটের সোলিং দিয়ে সড়ক সংস্কার করেছে মাদারীপুর সওজ বিভাগ। অধিকাংশ সময়ই গর্ত এড়াতে গিয়ে সংঘর্ষের শিকার হচ্ছে দূরপাল্লার যানবাহন। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আবার সড়কের পাশে খাদে পড়ে যাচ্ছে গাড়ি। এতে আহত-নিহত হওয়ার পাশাপাশি কয়েক মিনিটেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে দূরদূরান্তের যাত্রীরা। এসব দুর্ঘটনা এড়াতে ও যাত্রা পথে স্বস্তি ফেরাতে মহাসড়ক উন্নিত করছে সওজ। বালু ও পাথরের উপর পিস ঢালাই দিয়ে দুই পাশে চওড়া করছে। ৫-৬ কিলোমিটার করে খণ্ড খণ্ডভাবে কাজগুলো সম্পন্ন করা হচ্ছে।
যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দ্রুত এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু করা হোক। তাহলে নির্বিঘ্নে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাড়ি পৌঁছাতে পাড়বে এই অঞ্চলের মানুষ। কাউকে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হবে না।
এ বিষয়ে মাদারীপুর সড়ক ও জনপদের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান বলেন, আপাতত মহাসড়কের দুই পাশে বাড়ানো হচ্ছে। ছোট ছোট অনুমোদনের মাধ্যমে ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার করে কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকাংশের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে টেকেরহাট উত্তরপাড় থেকে রাজৈর ব্রিজ মোড় পর্যন্ত কাজ চলছে। সড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে এবং যানবাহন চলাচলে স্বস্তি ফেরাতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলো গত বছরের কাজ।
এক্সপ্রেসওয়ের বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী আরও বলেন, আমরা আবেদন জানিয়েছি। দাতা পেলেই ৬ লেন রাস্তার কাজ শুরু হবে। সেটারও কাজ চলছে। এগুলো কেন্দ্রীয় পর্যায়ের বিষয়। তবে এক্সপ্রেসওয়ে হওয়ার আগ পর্যন্ত যেন নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করতে পারে সেজন্য সরকারি অর্থায়নে সড়কটি বড় করা হচ্ছে।